সোসাইটির ইমিগ্রেশনবিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তারা ।। তথ্য যাচাই না করে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত গুজবে কান দেবেন না

সোসাইটি সংবাদ: বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ইমিগ্রেশন সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ সোসাইটির ইমিগ্রেশন বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা গত ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমান ইমিগ্রেশন ইস্যুতে বাংলাদেশীদের জন্য এই মুহূর্তে করণীয় কী তা জানতেই এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব ভবনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বেশ কয়েকজন ইমিগ্রেশন এটর্নি, বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তা ও সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ এবং সভার সঞ্চালক ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন সিদ্দিকী। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা।

সোসাইটির ইমিগ্রেশনবিষয়ক মতবিনিময় সভা

মতবিনিময় সভায় ইমিগ্রেশন নিয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন এটর্নি নাজমুল আলম, এটর্নি এম. আজিজ, ব্যারিস্টার ইশরাত সামী, এডভোকেট মোহাম্মদ এন. মজুমদার ও এডভোকেট মুজিবর রহমান।
মতবিনিময় সভায় এটর্নি নাজমুল আলম বলেন, আমেরিকানদের রক্ষার জন্য বিদেমী সন্ত্রাসীদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করতে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। ভবিষ্যতে এই তালিকায় আরো কয়েকটি দেশের নাম যুক্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমেরিকার জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন বিল ক্লিনটন। অথচ তার সময়েই ইমিগ্রেশন আইন সবচেয়ে কঠিন হয়েছে। আবার জর্জ ডব্লিউ বুশ ইরাক যুদ্ধের জন্য নিন্দিত হলেও তিনি ইমিগ্রেশন বান্ধব ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে সবচেয়ে বেশী লোককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এটর্নি নাজমুল আলম বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে কিভাবে হেল্প করা যায় তার উপায় খুঁজে বের করার পরামর্শ  দেন। তিনি বলেন, কোনো তথ্য যাচাই না করে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানান। এতে বরং ক্ষতিই হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার ইশরাত সামী বলেন, ট্রাম্পের এই আদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে মামলা হয়েছে।  তিনি অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে না আসার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বৈধ অনেক পথে যুক্তরাষ্ট্রে আসা যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাউকে যুক্তরাষ্ট্রে না আসার পরামর্শ দেন ইশরাত সামী। এটর্নি এম. আজিজ বলেন, সামনের পরিস্থিতি বর্তমান সময়ের চেয়ে ভালো হবে এমনটা আশা করি না। তিনি ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিধেষাজ্ঞার কথা তুলে ধরে বলেন, এসব দেশের কেউ যুক্তরাষ্ট্রে কখনো সন্ত্রাস করেনি। বাংলাদেশী ইমিগ্র্যান্টদের এই মুহূর্তে কোনো সমস্যা না হলেও বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে এম. আজিজ বলেন, দেশ থেকে যেসব ইমিগ্র্যান্ট আসবেন তারা যেনো আই-৪০৭ ফরমে স্বাক্ষর না করেন। কারণ এই ফরমে স্বাক্ষর করা মানেই হলো তিনি তার গ্রিনকার্ড স্বেচ্ছায় সমর্পন করছেন। এডভোকেট মোহাম্মদ এন. মজুমদার বলেন, বৈধ উপায়ে তারা গ্রিনকার্ড অজন করেছেন তাদের ভয়ের কিছু নেই। তবে যারা অবৈধ উপায়ে গ্রিনকার্ড পেয়েছেন এবং যাদের একাধিক নাম রয়েছে তাদের নিয়ে শঙ্কার কথা জানান তিনি। অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আইন মেনে চললে তার জন্য ভয়ের কিছু নেই।

সভাপতির বক্তৃতায় কামাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশীদের অনেকেই আতঙ্কে আছেন। তাদের সাহায্য করতেই বাংলাদেশ সোসাইটি এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে। বাংলাদেশী কমিউনিটির যে কোনো সমস্যায় বাংলাদেশ সোসাইটি পাশে থাকবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

সোসাইটির ইমিগ্রেশনবিষয়ক মতবিনিময় সভা

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাশে সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম কে জামান, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনিকা রায়, গণসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক নওশেদ হোসেন, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক আহসান হাবিব, কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ সাদী মিন্টু, আজাদ বাকের, সাবেক কার্যকরি সদস্য সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, জেবিবিএর প্রচার সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন প্রমুখ।

Copyright ©2016 Bangladesh Society Inc. All Rights Reserved. ★ Site Last Updated: 11-09-2022